২০২৩ সালে বায়ুদূষণে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম, শহরের হিসাবে ঢাকা দ্বিতীয়। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ারের প্রতিবেদনে উঠেছে এসেছে এই উদ্বেগ জাগানিয়া তথ্য।
প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইটভাটা, যানবাহনের কালো ধোয়া, নির্মাণ কাজের ধুলাবালি, কারখানার দূষণ ও প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে এই দূষণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইনের চেয়ে ঢাকার প্রতি ঘনমিটার বাতাসে ১৬ গুণ বেশি ধুলিকণার উপস্থিতি রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে পরিবেশ গবেষক অধ্যাপক আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, এক্ষেত্রে বলা চলে এক-চতুর্থাংশ দূষণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে এত বেশি বায়ু দূষণ বৃদ্ধি পাওয়া একটি অশনি সংকেত। পাশাপাশি এটি দুশ্চিন্তারও বিষয়। বায়ু দূষণ রোধে সব উৎসগুলোকে সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এক্ষেত্রে ইটের ভাটাগুলো নিয়ন্ত্রণ, ফিটনেসবিহীন যানবাহনকে ফিটনেসের আওতায় আনা, নির্মাণ সামগ্রীগুলো ঢেকে পরিবহন করতে হবে।
রাজধানীবাসী বায়ু দূষণে অনেকটাই অভ্যস্ত হয়ে গেলেও এর স্বল্প ও সুদূরপ্রসারী কুপ্রভাব রয়েছে। সামগ্রিক জনস্বাস্থ্যের জন্য এটি মারাত্মক হুমকি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জনস্বাস্থ্য বিশ্লেষক ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, গর্ভপাত, বিকলঙ্গ বা অটিস্টিক শিশু জন্মের ক্ষেত্রেও বায়ু দূষণ জড়িত। বাংলাদেশ বিশ্বের দূষিততম দেশের শীর্ষে অবস্থান করছে। এক্ষেত্রে বিকেন্দ্রীকরণ না করা হলে একদিকে জনসংখ্যার চাপ কমবে না, অন্যদিকে দেশকেও বসবাসযোগ্য করা সম্ভব হবে না।
এই অবস্থায় পরিবেশ, জলবায়ু ও বায়ুমান উন্নতির জন্য কাজ করছে সরকার। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জানালেন পরিকল্পনা ও বর্তমান উদ্যোগগুলো সম্পর্কে।
পরিবেশ ও বনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, গত দুই থেকে তিন দশক ধরেই সমস্যাটি আরও জটিল হচ্ছে। রাতারাতি এটি সমাধান পাওয়া সম্ভব নয়। তবে এ বিষয়ে সরকার আন্তরিক। এক্ষেত্রে ঢাকার আশেপাশে যে ইট ভাটাগুলো রয়েছে, এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া গেলে এ পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে। এছাড়া আমদানিকৃত ডিজেলে সালফারের পরিমাণ অনেক বেশি। এ বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, আইকিউ এয়ারের জরিপে ২০১৭ ও ২০১৯ সালে বিশ্বে বায়ুদূষণে প্রথম স্থানে ছিল বাংলাদেশ।