পট পরিবর্তন
মাজরুল ইসলাম
আরম্ভিক রঙে ছিল ঘন বিন্যাসের প্রকাশ
এখন যেন চিত্রগুলোই পিঙ্গলবর্ণ।
কালির ছোপ কিংবা
তুলির টান দেখে ল্যাংটা শিশুরও হাসি পাচ্ছে।
অপটু হাতের কাজ
অথচ পটীয়সী রংতুলি গলায়
ক্যাভাসে পট নিয়ে
পটাঙ্গ গান গেয়ে বেড়াচ্ছে —
সে নাকি আমার জন্য
দৃষ্টি নন্দন ছবি আঁকতে
বরাদ্দের বেশি রং খরচ করে ফেলেছে।
চোখের ওপর ফানুস
পেছনে দূরন্ত ঢেউ
এরই ফাঁকে ফাঁকে রঙের তাসে পিঠ জিতে নিচ্ছে।
পটে হিজিবিজি রঙের দাগ দেখতে চাই না,
চাই দৃষ্টি নান্দনিক ছবি ।
দলিত হৃদয়ের বেদনা
মাজরুল ইসলাম
গোত্রের প্রধান পিতার উদার হাত যখন সগোত্রের মাথায়
তখন আমার দিকে লেলানো বাঁকা ঠোঁট
তীব্র গতিতে ধেয়ে এল।
এরপর দলিত হৃদয়ের বেদনা ছাড়া আর কী বা অবশিষ্ট থাকে !
বেহায়া প্রতিভা বাজখাঁই গলার
এ-এক চিত্তবিকার রোগ।
কারুর মুখে তার ছাড়া অন্য কারো স্তুতি শুনলে , হয় সেলে
না-হয় টুঁটি টিপে বাকরুদ্ধ করে দিচ্ছে
বিক্ষোভ দমনের নির্মম সত্য এটাই—
সভ্যতার উষালগ্ন থেকে কড়ি ও শ্রমের নিত্য নিঠুর দ্বন্দ্ব আজও প্রবাহিত।
এদিকে দৃষ্টি কারও নেই , বরং
স্বজন প্রীতিতে এক ঘন অন্ধগলিতে নিমজ্জিত।
সময় , আশ্বাস , রাজনীতি ও সাম্যবাদ সবই জলের দাগের মতো উবে গেছে
শুধু রয়ে গেল
দলিত হৃদয়ের বেদনা এখনও।
স্বমহিমায়
মাজরুল ইসলাম
খামার বাড়ি থেকে স্বাস্থ্যভবন ,বিদ্যাভবন , এমনকী মৃত্যুভবন পর্যন্ত
কাঁকর বিছানো পথ।
এটাই বাস্তব ,
কেননা এ-যেন আইন সিদ্ধ হয়ে গেছে
কাঁকর বিছানো পথ দেখেও
দৃষ্টিনিক্ষেপ করা যাবে না।
সব চাতুরীর সঙ্গে আমি যখন নিজেকে খাপ খাওয়াতে এগিয়ে
তখন চিত্তহারী আঙ্গুলে সুতো জড়িয়ে আমাকে পুতুল নাচাচ্ছে।
ভাড়ার খালি
তার কিছুই করার নেই
বলছে ,চপ আর ঝাল মুড়ির ঠোঙা বানিয়ে মোড়ে বসে যাও।
উধাও উন্নয়নের ফানুস, এখন খিদের পূর্বাভাস।
বারবার সে বাধ্য করেছে
কাঁকর বিছানো পথে হাঁটতে
কিন্তু পথভ্রষ্ট হইনি
পথ কষ্ট ও খিদে জয় করে আজও বেঁচে আছি
এবং বেঁচে থাকব স্বমহিমায়
পুতুল নাচের সুতো জড়ানো তার আঙ্গুলের পতন না দেখা পর্যন্ত।