৭৫-পরবর্তী সময়ে মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের পরিচয় দিতে ভয় পেতো। বিজয়ী জাতি তাদের গর্বের কথা বলতে পারতো না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পদক প্রদান অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় এ মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছিল। সাতই মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ ছিল। যেই জয় বাংলা স্লোগানে বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে স্বাধীনতা এনে দেয়, সেই স্লোগানও নিষিদ্ধ ছিল। জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার বন্ধ করতে আইন করা হয়, খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃতও করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, রমজান মাসে যেন মানুষের কষ্ট না হয়, সেজন্য আমরা বিনা পয়সায় খাদ্য বিতরণ করছি। ইফতার পার্টি বাদ দিয়েছি। দলের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে প্রতিটি অফিস ও প্রতিষ্ঠানকে আহ্বান করেছি- ইফতার পার্টি বাদ দিয়ে সাধারণের মাঝে ইফতার বণ্টন করতে। ইফতার পার্টিতে খাওয়া বড় কথা নয়, মানুষকে দেয়াই বড় কথা। আমরা খাওয়ার দিকে মনোযোগ না দিয়ে, মানুষকে দেয়ার দিকে মনোযোগ দিয়েছি।
বঙ্গবন্ধুর কারণেই স্বাধীন বাংলাদেশে ঘাঁটি গেড়ে বসেনি ভারত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিত্র বাহিনী, ভারতের সেনাবাহিনী যারা মুক্তিযুদ্ধে আমাদের সেনাবাহিনীর সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে বিজয়কে ত্বরাণিত করেছিলেন, সেই মিত্রবাহিনীও কিন্তু স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেছিল। বিশ্বের ইতিহাসে এটি বিরল ঘটনা। পৃথিবীর সবদেশেই যারা মিত্রবাহিনী তারা এখন পর্যন্ত সেই দেশে ঘাঁটি গেড়ে বসে আছে। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যতিক্রম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো স্বাধীনচেতা একজন দেশপ্রেমিক তিনি এ দেশের দায়িত্বভার নিয়েছিলেন বলেই এটি সম্ভব হয়েছিল।
এর আগে, জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১০ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৪ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার স্বাধীনতা পদক পেয়েছেন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে কাজী আব্দুস সাত্তার, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফ্লাইট সার্জেন্ট মো. ফজলুল হক (মরণোত্তর), বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ আবু নঈম মো. নজিব উদ্দীন খাঁন খুররম (মরণোত্তর), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ড. মোবারক আহমদ খান, চিকিৎসাবিদ্যায় ডা. হরিশংকর দাশ, সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান, ক্রীড়ায় ফিরোজা খাতুন, সমাজ বা জনসেবায় অরন্য চিরান, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. মোল্লা ওবায়েদুল্লাহ বাকী ও এসএম আব্রাহাম লিংকন।