আজকের বিআরবির এই সভার সম্মানিত সভাপতি,ও উপস্থিত সকল সুধিমন্ডলী, যারা শুনছেন এবং ভবিষ্যতে শুনবেন, এশিয়া মহাদেশ এবং ইউরোপের অনেক দেশে ওভার হেড লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিদ্যমান, সবচেয়ে অনিরাপদ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বাংলাদেশ, সবার জন্য নিরাপদ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল রাখার জন্য পরিকল্পনা ও টেকসই উন্নয়ন পদ্ধতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। ১৯৮৫ সাল থেকে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সেক্টরে আমাদের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সেবা দিয়ে আসছি তারই আলোকে আমার মতামত নিম্নরূপঃ
১) বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে শুরু করে তার সঠিক ব্যবহার পর্যন্ত এর সকল খরচ বিল পর্যায় গণমানুষকে সচেতন করা, এদেশের জনগণের টাকায় যেহেতু বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়, তাহলে অপচয় কমে আসবে।
২) বাংলাদেশের সোলার প্যানেল উৎপাদন শিল্প প্রতিষ্ঠিত করে, সোলার ব্যবস্থাপনা কে সহজ থেকে সহজতর করা প্রয়োজন। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি লীথিয়ামের খনি আফগানিস্তানে আছে, আফগানিস্তান থেকে লিথিয়াম আমদানি করে ব্যাটারি উৎপাদন সংশ্লিষ্ট কাজে রাষ্ট্রীয় ও মালিকানা ব্যবস্থাপনায় সহজ ও স্বল্পমূল্যে সোলার থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন স্টোরেজ করার ব্যবস্থা করলে কৃষি শিল্প সহ সারা বাংলাদেশের প্রত্যেক বাড়িতে এর ব্যবহারের বিপ্লব ঘটবে বলে আশা করি।
৩) বাংলাদেশের সকল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য ব্যক্তি বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এনার্জি নিয়ে গবেষণা করার সহজ ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন।
৪) বৈদ্যুতিক কাজে ব্যবহৃত সকল যন্ত্রাংশ বাংলাদেশে উৎপাদন করার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে সকল পর্যায়ে সহজ থেকে সহজতর করা প্রয়োজন। যেন নিজের দেশের চাহিদা মিটিয়ে তা একটি রপ্তানি শিল্পে পরিণত হয়।
৪) উদাহরণস্বরূপ গ্রামীণ শক্তি সোলার গুলো বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চলে প্রায় ২০ বছর আগে স্থাপন করা হলেও এখন পর্যন্ত তা সচল আছে। শহর অঞ্চল গুলোতে বিল্ডিং এর ছাদে সোলার প্যানেল থাকলেও ব্যাটারি ও ইনভার্টার এর উচ্চ দাম ও সচেতনতার অভাবে তা ব্যবহার হচ্ছে না, অন গ্রিড পদ্ধতিতে মিটার স্থাপন করলে একজন গ্রাহক সহজে বুঝতে পারবে যে সোলার থেকে কি পরিমান/ কত টাকার বিদ্যুৎ তিনি ব্যবহার করছেন। পার্থক্য বুঝতে পারলে এর ব্যবহার বাড়বে বলে মনে করি।
৫) সারা বাংলাদেশের ভৌগলিক এলাকা জরিপ পূর্বক অতি দ্রুত অল্প সময়ের মধ্যে সোলার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করার জন্য দেশীয়/দাতা সংস্থা থেকে শুরু করে উৎপাদন ও বিপণন সকল পর্যায়ে টার্গেট করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সকল কাজ সম্পাদন করার জন্য ২৪/৭ দিন কোয়াটারলি হাফ ইয়ারলি ইয়ারলি মনিটরিং এর মাধ্যমে কার্যক্রম গ্রহণ করা প্রয়োজন।
৬) পঞ্চ ইন্দ্রিয় দ্বারা যেহেতু বিদ্যুৎ কে দেখা যায় না বুঝা যায় না, তাই সবার জন্য নিরাপদ বিদ্যুতের জন্য সচেতনতা বাড়াতে হবে, বাড়িঘর শিল্প কারখানা স্থাপনা তৈরি করার সময়, নিরাপদ দূরত্বে স্থাপন করতে হবে।
৭) চায়নাতে যেমন অলিতে গলিতে উৎপাদন মুখে ক্ষুদ্র শিল্প রয়েছে সকল শ্রেণীর মানুষ কাজ করছে ইন্ডিয়াতে যেমন আই টি তে সারা বিশ্ব অবদান রাখছে, আপনারা জানেন বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং কাজে সারা বিশ্বের সুনাম অর্জন করে চলছে, ঠিক তেমনি বাংলাদেশের সকল উৎপাদনশীল গবেষণা বাস্তবায়ন কাজে নিয়োজিত সকল ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানকে সরকারি দপ্তর থেকে বাধা না দিয়ে সহজ করার ব্যবস্থা করতে হবে, যেমন ট্রেড লাইসেন্স ট্যাক্স সার্টিফিকেট, আমদানি, কাস্টমসের বহুমুখী এগুলোকে নামমাত্র মূল্যে সহজ করতে হবে, যেমন পৃথিবীর অনেক দেশ আছে উৎপাদন সকল কার্যক্রমে ভ্যাট ট্যাক্স এবং রাষ্ট্র বা সরকার দ্বারা কোন প্রতিবন্ধকতা নেই, বাংলাদেশের জন্য তাই প্রযোজ্য বলে আমি মনে করি।
৮) সৎ কাজে উৎসাহ দেওয়া পুরস্কৃত করা অসৎ কাজে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, রাষ্ট্র বা সরকার থেকে দেশের জনগণকে উৎসাহ দিতে হবে কর্তব্য এবং অধিকার সম্বন্ধে সচেতন করে তুলতে হবে।
সকল প্রকার দুর্নীতি এর টুটি চেপে ধরতে হবে, সকলের সুচিন্তিত মতামতের অপেক্ষায় রইলাম
ধন্যবাদান্তে
প্রকৌশলী মোঃ বেলাল হোসেন
হিলফুল গ্রুপ