১২ মে, ইন্টারন্যাশনাল নার্সেস ও মিডওয়াইফ ডে ২০২৪। নার্সেস পৃথিবীর জননী খ্যাত ব্যক্তিত্ব ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেলের জন্মদিন উপলক্ষে (১২ মে) বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে ইন্টারন্যাশনাল নার্সেস ও মিডওয়াইফ ডে। ১৮২০ সালের এই দিনে ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেল জন্মগ্রহণ করেন।
ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় আন্তর্জাতিক নার্সেস দিবস সম্পর্কে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠান, সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং হিস্টোরি অব নার্সিং বইয়ের মোড়ক উন্মোচন।
সকাল দশটায় জাতীয় জাদুঘর থেকে টিএসসি চত্বর হয়ে শাহবাগ মোড় পর্যন্ত রেলি অনুষ্ঠিত হয়।
এই দিবসটির প্রতিপাদ্য নিয়ে লেখা ‘আওয়ার নার্সেস, আওয়ার ফিউচার’ স্লোগান লেখা ব্যানার ও ফেস্টুন দেখা গেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হাতে।
আওয়ার নার্সেস, আওয়ার ফিউচার স্লোগানে মুখরিত হয়েছে শাহবাগ থেকে টিএসসি চত্বর হয়ে রাজু ভাস্কর্যের সামনে গণমাধ্যমকে বিশেষ সাক্ষাৎকার প্রদান করেন বাংলাদেশে নার্সিং শিক্ষায় প্রথম পিএইচডি ডিগ্রির অধিকারী প্রফেসর ডক্টর আনিসুর রহমান ফরাজী।
তিনি বলেন, নার্সিং সমাজের জাগরণের দিন হলো ১২ মে, এই দিনে সারা পৃথিবীর নার্সিং সমাজ ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেলের জন্মদিন এবং ইন্টারন্যাশনাল নার্সেস দিবস পালন করে থাকে। আমরাও আমাদের কলেজ রুফাইদা কলেজ অব নার্সিং এর পক্ষ থেকে শিক্ষক -শিক্ষার্থীদের নিয়ে নার্সিং সমাজ ও সম্প্রদায়ের প্রতি শুভেচ্ছা জানানোর জন্য এখানে একত্রিত হয়েছি। আমাদের শিক্ষার্থীরা এখানে বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত করছে। আমাদের স্লোগান হল আওয়ার নার্সেস, আওয়ার ফিউচার।
রেলি শেষে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অংশগ্রহণ করেছেন দেশ বরেণ্য ব্যক্তিগণ।
প্রধান অতিথি হিসেবে আসন অলংকৃত করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী, মহাপরিচালক, বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেট। মিস্টার মোহিনী মোহন চক্রবর্তী, প্রাক্তন যুগ্ম সচিব ও পরিচালক, আম্বার গ্রুপ। মিসেস মাসুদা বেগম, উপসচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়। ডাক্তার আফতাব উদ্দিন, চেয়ারপারসন, পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। ব্যারিস্টার দেওয়ান মামুনূর রশিদ, প্রিন্সিপাল, দ্যা অক্সফোর্ড ল একাডেমি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর ড. আনিসুর রহমান ফারাজি, প্রিন্সিপাল, রুফাইদা কলেজ অব নার্সিং। প্রধান অতিথি ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ বলেন, একটি নার্সিং বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত প্রয়োজন। নার্সদেরকে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ এবং মূল্যবান মানুষ হিসেবে আমাদের ভাবতে হবে। নার্স কোনভাবেই অবহেলিত নয়, এই বিষয়টি জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে। নার্সিং সমাজের ইতিহাস নিয়ে যেই গুরুত্বপূর্ণ বইটি ড. আনিসুর রহমান ফরাজী লিখেছেন এইজন্য তাকে অভিনন্দন জানাই। ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন নার্স সমাজের যে এত গর্বিত ইতিহাস আছে তা আমার আগে জানা ছিল না। আমি এখানে এসে অনেক কিছু জানার সুযোগ পেলাম, নার্সিং সমাজের প্রতি এবং রুফাইদা কলেজ অফ নার্সিং এর প্রতি শুভেচ্ছা রইলো। নার্সদের গুরুত্ব বাড়ানোর জন্য সরকারকে আরো উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি নার্সিং বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়েও গুরুত্ব আরোপ করেছেন। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রবীণ নার্স মিসেস মনিরা খানম, পরিচালক, বাংলাদেশ নার্সিং কলেজ। ব্যারিস্টার দেওয়ান মামুনূর রশিদ তার বক্তব্যে নার্সিং সমাজের মধ্যে ‘হিস্টোরি অব নার্সিং’ বইটি ইতিহাসের অমূল্য সম্পদ বলে আখ্যায়িত করেন। প্রতিবছর আন্তর্জাতিক নার্সেস দিবস পালনের পাশাপাশি হিস্টোরি অব নার্সিং বইয়ের জন্মদিন হিসেবে এই দিনটিকে চিহ্নিত করার ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশে নার্সিং বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হবে। সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড. আনিসুর রহমান ফরাজী বলেন শিক্ষার্থীদের প্রতি শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি রুফাইদা কলেজ অব নার্সিং এর চেয়ারম্যান জনাব আরিফুর রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তার লেখা কালজয়ী বই হিস্টোরি অব নার্সিং এর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনার পাশাপাশি পূর্ণাঙ্গ প্রকাশনার বিষয়ে সকলের সর্বাত্মক ও আন্তরিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।