তাড়াশের নওগাঁয় ঐতিহ্যবাহী ‘বউ মেলা
সাব্বির মির্জা, সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে প্রতি বছরের ন্যায় ঐতিহ্যবাহী ‘বউ মেলা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিবছরের ন্যায় শনিবার সকাল থেকে সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর এই তিন জেলার মিলনস্থল নওগাঁ’র করতোয়া নদীর তটে জমজমাট মেলায় শত শত বউ -শ্বাশুড়ী মেলায় উৎসব আমেজে কেনাকাটা করেন।
আয়োজকরা জানায়, ভারতের আজমীর শরীফের পীর খাজা মইনুদ্দিন চিশতী রহ.’র আধ্যাত্মিক গুরু নওগাঁর হাজী শাহ শরীফ জিন্দানী (রহ) মাজারে ৩ দিন ব্যাপী বার্ষিক ওরস অনুষ্ঠিত হয়। ওরস উপলক্ষে শেষের দিন অথাৎ শনিবার ওই ঐতিহ্যবাহী বউ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এতে শুধু নারীরাই কেনা-কাটা করে।
মেলায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, উল্লাপাড়া,পাবনার ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর ও নাটোরের গুরুদাসপুর এই চার উপজেলার হাজার হাজার নারীদের উপস্থিতিতে মেলার স্থল সড়গরম হয়ে ওঠে। বিশেষ করে একদিনের জন্য বউ শ্বাশুড়ীরা কেনা কাটায় মেতে ওঠেন । এতে করে ঐতিহ্যবাহী বউ মেলা এলাকায় বউ-শ্বাশুড়ীর মিলন মেলায় পরিণত হয়।
মেলার বিশেষ আকর্ষণ কাঠের তৈরী আসবাব পত্র, গৃহস্থালী জিনিস পত্র, মৃৎপাত্র, কসমেটিক সামগ্রী , মিঠাই মিষ্টান্ন থেকে সব কিছু প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় । বছরের একটি দিন বউমেলাকে ঘিরে এলাকার ঘরে ঘরে ঝি –জামাইও নাইওরে আনা হয় । ফলে এলাকায় নারীদের মাঝে উৎসব আমেজ ছড়িয়ে পড়ে।
মেলার দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি কেনাকাটার পাশাপাশি মেলায় আগত বউ-শ্বাশুড়ী , কিশোরী, জায়া-জননী, নারীরা নওগাঁর জিন্দানীর মাজার জিয়ারত, ১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিম্ভ দর্শণ, মামা-ভাগ্নের ভাঙ্গা মসজিদ এবং ঐতিহাসিক ভানু সিং দীঘি পরিদর্শন করেন।
সন্ধ্যায় মিলন মেলা সাঙ্গ হলে বউ-শ্বাশুড়ী, কন্যা, জায়া, জননীরা যার যার বাড়ি ফেরেন আবারও একটি বছরের অপেক্ষা নিয়ে।