বাংলা সংবাদ মাধ্যম

ইংলিশদের ‘বাংলাওয়াশ’

টানা দুই ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশ। এবার শেষ ম্যাচের জয়ে ইংলিশদের ‘বাংলাওয়াশ’ করলো সাকিবরা।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার (১৪ মার্চ) সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি খেলতে নামে হৃদয়রা। ম্যাচ শুরু হয় বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩টায়।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদারের জুটিতে পঞ্চাশ ছাড়ায় স্বাগতিকদের সংগ্রহ। পরে ১৫৮ রানে থামে টাইগাররা। লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৪২ রানেই গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড।

ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরু পায় বাংলাদেশ। লিটন দাস ও রনি তালুকদার ৭.৩ ওভারে ৫৫ রান যোগ করেন। রনি ফিরে যান ২২ বলে তিন চারে ২৪ রান করে। 

এরপর লিটন ও নাজমুল শান্ত জুটি গড়েন। ওই জুটি থেকে টাইগাররা পায় ৮৪ রান। রান খরায় থাকা লিটন দাস ৭৩ রানের ইনিংস খেলে আউট হন। তার ৫৭ বলের ইনিংস সাজানো ছিল ১০টি চার ও এক ছক্কায়। তার সঙ্গে জুটি গড়া শান্ত ইনিংস শেষ করে আসেন ৩৬ বলে ৪৭ রান করে। দুটি ছক্কা ও একটি চার হাঁকান তিনি। সাকিব ৬ বলে ৪ রান করেন।

লিটন ১৭তম ওভারের শেষ বলে আউট হন। দলের রান তখন ছিল ১৩৯। ওই জায়গা থেকে স্লগে সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ। এমনকি বাংলাদেশ ১০০ রান করেছিল ১২.২ ওভারে। ওই জায়গা থেকে ১৭০-১৮০ রান পাওয়ার  আশা ছিল দলের। কিন্তু স্লগে ক্রিস জর্ডান-স্যাম কারেনরা ভালো বোলিং করায় সেটা সম্ভব হয়নি।

শেষ ৫ ওভারে এসেছে মাত্র ২৭ রান, এ সময়ে বাংলাদেশ মারতে পেরেছে মাত্র একটি বাউন্ডারি—জর্ডানকে ফ্লিক করে মেরেছিলেন নাজমুল। চট্টগ্রামে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে প্রায় একইরকম অবস্থা ছিল ইংল্যান্ডেরও।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় সফরকারীরা। ইনিংসের প্রথম ওভারেই সল্টকে শূন্য রানে ফিরিয়ে ইংলিশ শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন অভিষিক্ত তানভীর ইসলাম। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটি তার প্রথম উইকেট।

অবশ্য ৫ রানে সল্টকে হারানোর পর মালান-বাটলারের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় ইংলিশরা। বিশেষ করে ডেভিড মালান এদিন শুরু থেকেই দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। দ্বিতীয় উইকেটে জস বাটলারকে সঙ্গে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন পঞ্চাশ রানের জুটিতে দলকে জয়ের পথেই রাখেন এই ওপেনার।

প্রথম দুই ম্যাচে ব্যর্থ মালান সিরিজের শেষ ম্যাচে এসে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। ৪৩ বল খেলে ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূরণ করেন তিনি। এরপর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৫৩ রান করে মুস্তাফিজের বলে উইকেটের পেছনে লিটনের হাতে ধরা পড়েন তিনি।

মালান ফেরার পরের বলেই রান আউটে কাটা পড়েন বাটলার। ইংলিশ অধিনায়ক সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৪০ রান। একই ওভারে দুই সেট ব্যাটারকে সাজঘরে ফিরিয়ে আবারও ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। বিপরীতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারায় ইংল্যান্ড।

এরপর মঈন আলিকেও বেশিক্ষণ টিকতে দেননি তাসকিন আহমেদ। ৯ রান করা এই অলরাউন্ডারকে মিরাজের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরান এই পেসার। একই ওভারের শেষ বলে বেন ডাকেটকে বোল্ড করেন তাসকিন। এর ফলে ২ উইকেটে ১০০ থেকে ১২৩ এ পৌঁছাতে আরও তিন উইকেট হারায় ইংল্যান্ড।

শেষ ৩ ওভারে জয়ের জন্য ৩১ রান প্রয়োজন ছিল ইংল্যান্ডের। ১৮তম ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই স্যাম কারানকে ফেরান বাংলাদেশ অধিনায়ক। এরপর লেগের সারির ব্যাটাররা চেষ্টা করলেও ম্যাচে ফিরতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪২ রান তুলে ইংল্যান্ড।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৪২/৬।

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫৮/২ (লিটন ৭৩, রনি ২৪, শান্ত ৪৭*, সাকিব ৪*; কারান ৪-০-২৮-০, ওকস ১-০-১২-০, রশিদ ৪-০-২৩-১, আর্চার ৪-০-৩৩-০, রেহান ৩-০-২৬-০, মইন ১-০-১২-০, জর্ডান ৩-০-২১-১)।

ফলাফল: ১৬ রানে জয়ী বাংলাদেশ।

Leave A Reply

Your email address will not be published.