বাংলা সংবাদ মাধ্যম

সুনির্দিষ্ট গঠনতন্ত্র থাকার পরেও হচ্ছে না নির্বাচন, কর্মচারীদের মাঝে ক্ষোভ

আরাফাত হোসেন:
বাংলাদেশ সমাজসেবা কর্মচারি কল্যাণ সমিতির (ঢ-০২৬০৪) ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন নিয়ে নানা তালবাহানা করার অভিযোগ উঠেছে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। সমিতির চলমান কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার এক বছর পার হয়ে গেলেও নির্বাচন না হওয়ায় কর্মচারিদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে তেমন চলছে অনেক গুঞ্জন। কর্মচারীদের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা এবং তাদের দাবি দাওয়া আদায়ের ভাষাকে কণ্ঠরোধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নির্বাচন দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করছেন কর্মচারিরা।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের একাধিক কর্মচারির সাথে কথা বললে তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সমাজসেবা কর্মচারি কল্যাণ সমিতি একটি রেজিঃপ্রাপ্ত সংগঠন। কিন্তু নিজস্ব কোন প্লাটফর্ম না থাকায় এবং তাদের নির্বাচিত নেতৃত্ব না থাকার কারণে তারা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

বাংলাদেশ সমাজসেবা অধিদপ্তরের উচ্চমান সহকারী যুক্ত হিসাবরক্ষক মো. জাকির হোসেন জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সমাজসেবা কর্মচারি কল্যাণ সমিতি সমাজসেবা অধিদফতরের প্রায় ১২ হাজার কর্মচারির প্রাণের সংগঠন। এই সংগঠনের অনুমোদিত গঠনতন্ত্রের ধারা অনুযায়ী- প্রতি তিন বছর পরপর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই ধারাবাহিকতায় নব্বই দশক থেকে নির্বাচন হয়ে আসছে। সর্বশেষ সমিতির নির্বাচিত পরিষদের মেয়াদ গত ৩১-১২-২০২১ তারিখে শেষ হয়। মেয়াদ শেষ হওয়ায় সমিতির দায়িত্বভার প্রশাসক নিয়োগ করে তার নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার লক্ষে ১৮-১০-২০২১ তারিখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনী তফসিলের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সমাজসেবা কর্মচারি কল্যাণ সমিতি নির্বাচন-২০২১ উপলক্ষে খসড়া ভোটার তালিকা প্রেরণ করার জন্য নির্বাচন কমিশনার ও উপপরিচালক, জেলা সমাজসেবা কার্যালয় (সকল) বরারর পত্র প্রেরণ করে। পরবর্তীতে ৫০টি জেলা থেকে খসড়া ভোটার তালিকা প্রেরণ করা হয়। যার ফলে অধিদফতরের সকল পর্যায়ের কর্মচারিদের মধ্যে নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি হয় এবং প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণা কার্যক্রম শুরু করে। কিন্তু তারপর থেকে নানা তালবাহানায় নির্বাচন এখনো আলোর মুখ দেখেনি।

জাকির হোসেন আরো বলেন, বাংলাদেশ সমাসসেবা কর্মচারি কল্যাণ সমিতি একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। আমরা কর্মচারিদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য নির্বাচিত একটি পরিষদ চাই। কিন্তু বারবার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে কথা বলেও কোন সুরাহা পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে সারাদেশের কর্মচারিদের মনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে সমিতির বর্তমান প্রশাসক এবং অধিপফতরের সামাজিক নিরাপত্তা বিভাগের উপপরিচালক মোস্তাফা মাহমুদ সারোয়ার জানান, ব্যাস্ততার করাণে যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে খুব দ্রুত নির্বাচত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার, অধিদপফতরের প্রশাসন ও অর্থ বিভাগের পরিচালক যুগ্ম সচিব সৈয়দ নূরুল বাসির জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষ আদেশ দিলে তিনি নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন। নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত কেন হয়নি এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ হয়তো কর্মচারিদের এই নির্বাচনকে তেমন গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন না, এছাড়াও অধিদপ্তরের নিয়োগসহ নানা কার্যক্রম নিয়ে সবাই ব্যস্ত সময় পার করছেন।

এ বিষয়ে সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন। তবে কি কারণে এতোদিন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় নি -এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন তিনি বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছেন, সময় হলে বিস্তারিত জানাবেন। পাশাপাশি কর্মচারিদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, খুব দ্রুত নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.